অনুবাদ-১২৪

যিশু
অনুবাদ
ড্রাফট-১২৪

(যিশু কি মুসলিম ছিলেন? অধ্যায়-২
“তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের একটি নৈতিক সমালোচনা”)


বিদ্রুপাত্মক ভাবে , এই লেখক আরও বলেছেন, “আমরা ‘পবিত্র বাস্তবতা’ (Sacred reality) শব্দটি আন্তঃ-সাংস্কৃতিকভাবে (Cross culturally) ঘটতে থাকা ধর্মীয় উৎসের সাধারণ বিভাজন বুঝতে ব্যবহার করব।”২১ কিন্তু অতপরঃ  তিনি লক্ষ্য করেন, ‘পবিত্র বাস্তবতা’ কোনো প্রকার রেফারেন্সিয়াল মান ছাড়াই কনফুসিয়ানিজমে কেমন করে ‘পবিত্র’ (শব্দটি পরিবর্তন হয়ে) ধর্মনিরপেক্ষতার রূপ ধারণ করেছে। তুলনামূলক ধর্ম বিষয়টি (এন্টারপ্রাইজটি) এমন একটি যুক্তিহীন (flimsy) ভিত্তির উপর সৃষ্ট যে – যারা এটা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাদের ক্রমাগত এটিকে ন্যায্য করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এটি কোন নিষ্ক্রিয় বিষয় নয়, যখন আমরা ন্যায়বিচারের বিষয়গুলি বিবেচনা করি তখন স্ব-ন্যায্যতা (self justice) কপটতাপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। আন্তঃ- সাংস্কৃতিক ধর্মীয় সিফাতের প্রেক্ষাপটে ধর্মের তুলনামূলক অধ্যয়নের উদ্দেশ্য দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করে (predicating/ভবিষ্যদ্বাণী) নির্দ্বিধায় ধর্মের ধারণার অস্পষ্ট প্রকৃতিকে অনুমোদন করা হয়ে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি যে, একবার মানিয়ে নেওয়া গেলে   নৈতিকভাবে আমরা কোন নিরপেক্ষ উপায়ে ধর্ম অনুশীলন করতে পারি। আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বা সামাজিক অবিচার নিয়ে খুব বেশি চিন্তা না করেও স্বাধীনভাবে ধর্মীয় জীবনযাপন করতে পারি। 

যে সমস্ত কারণের জন্য আমরা দেখেছি, টিমোথি ফিটজেরাল্ড জোরালোভাবে দাবি করেছেন যে “ধর্মকে যুক্তিসঙ্গতভাবে কোন বৈধ বিশ্লেষণাত্মক শ্রেণীভুক্ত করা যায় না এ কারণে যে ধর্মগুলি জীবনের কোনও স্বতন্ত্র আন্তঃ-সাংস্কৃতিক   (Cross cultural) দিক বেছে নেয় না”।২২  সমাজের একটি উদ্দেশ্যমূলক বৈশিষ্ট্য হিসাবে ধর্মকে অধ্যয়ন করার পরিবর্তে ফিটজেরাল্ড প্রস্তাব করেছেন যে  ধর্মকে আমরা একটি আদর্শিক সৃষ্টি হিসাবে অধ্যয়ন করি যা ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট যুগ সন্ধিক্ষণে   (বিন্দুতে) বিকশিত হয়েছিল, যেমন উনিশ শতকের ইউরোপীয় উপনিবেশের সময়কাল। বুৎপত্তিগত শ্রেণীর (জেনেরিক ক্যাটাগরির) ধর্ম ফিটজেরাল্ডের অনুমিত সময়ের চেয়ে অনেক আগে ফিরে যেতে পারে, কিন্তু তিনি চিডেস্টারের সাথে একমত যে ধর্ম নিজেই ক্ষমতার একটি শব্দ হয়ে উঠতে পারে । সেটি কিছু সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে ধর্ম হিসাবে জাহির করার পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সেটি  প্রণীত হতে পারে অন্যদের উপর ক্ষমতা প্রদর্শন এবং তা বজায় রাখা ও তাদের ব্যবহার করার কৌশল হিসাবে। ফিটজেরাল্ডের মতে, ধর্মের অধ্যয়ন, বিশ্বাস ও উপাসনার বিকল্প রূপের সাথে শিক্ষার্থীর মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে, প্রকৃতপক্ষে এই বিকল্প রূপগুলোর (ফর্ম) উপর পাশ্চাত্য ধর্মীয় রূপগুলির অতি সূক্ষ্ম তারতম্য আরোপ করে থাকে, বিশেষত পবিত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ, ধর্ম এবং রাজনীতির মতো অনেক দ্বৈত মতবাদ, বা ধর্ম এবং অর্থনীতির  ক্ষেত্রে।
আরও গুরুতর বিষয় হলো, ধর্ম শব্দটি (পরিভাষা) “ক্ষমতার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন মানব সম্পর্কের একটি ধারণা তৈরি করে। ধর্ম বিষয়ে লিখিত বইগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেগুলো তথাকথিত ধর্ম বিশ্বাসের সম্প্রদায় সমূহের আদর্শিক জগত উপস্থাপন করে তথা ধর্মীয় ক্ষেত্রের উপাসনা, রীতিনীতি, বিশ্বাস, মতবাদ এবং আচারসমূহ বিভিন্ন সমাজের ক্ষমতার বাস্তবতা থেকে আলাদা দেখানো হয়ে থাকে।” 23 এখানে ফিটজেরাল্ড আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং ফরিদ ইসাকের কাছ থেকে ইসলামকে (সিফাত বিবেচনায়), ধর্মের সাথে সংযুক্ত করার অভিযোগের বিষয়টি আমলে   নেন।
ইসলাম যদি একটি ‘ধর্ম’ (বিবেচিত) হয় তবে, এটা ক্ষমতা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে, এইভাবে মানবকে নির্যাতন থেকে বাধা দিতে পারে এমন একটি সিফাত (সম্পদ) থেকে বঞ্চিত করা হয় বা তাদেরকে  তা থেকে বঞ্চিত হতে উদ্ভুদ্ধ করা হয়।
(এমন ভাবেই) ইসলাম একটি অরাজনৈতিক “ধর্মীয় সম্প্রদায়ে” রূপান্তরিত হয়েছে।

ধর্মের বুৎপত্তিগত শ্রেণী (generic category) আসলেই এমন কোন শব্দ (পরিভাষা) নয় যা পৃথিবীতে অস্তিত্ব আছে এমন কোন একটি বস্তুকে কেবলমাত্র বুঝিয়ে থাকে । এটি একটি আদর্শিক উদ্ভাবন যা ইতিহাস জুড়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কৃষ্টি বিকৃত করার জন্য ব্যবহৃত হয় আধিপত্যবাদী শক্তির প্রয়োজনে।
 
(এ অংশ ভাবানুবাদ করা হয়েছে।)

(চলবে)

অনুবাদক: সৈয়দ মোহাম্মদ সালেহ উদ্দিন।

অনুবাদকের কথা

Robert F. Shedinger লিখিত “Was Jesus a Muslim?” নামের পুস্তকটি আমি ড: শাহ মুহাম্মদ আব্দুর রাহিম সাহেবের অনুরোধে অনুবাদ করে যাচ্ছি ও অতঃপর ধারাবাহিকভাবে পোষ্ট দিচ্ছি ꫰ এর সবগুলো পোষ্টই আপনারা এফবি বা আমার সাইটে দেখে নিতে পারবেন ꫰
আমি আমার কর্মে কেবল লেখকের লেখাটিই অর্থ ঠিক রেখে ভাষান্তরের চেষ্টা করেছি ꫰ অবশ্য, কোন কোন পোষ্টে আমাকে ছোট্ট ভূমিকাও লিখতে হয়েছে ꫰
তবে মূল পুস্তকের পাঠ সহজবোধ্য করার জন্য আমাকে এর বাক্য কখনও কখনও আমার নিজের মত করে ভেঙে পুনরায় গড়তে হয়েছে ꫰ কোথাও প্রয়োজনে ব্রাকেটে আমার নিজ মত বা প্রাসঙ্গিক কারোর মত, ইংরেজি টেক্সট বা কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় ও লিঙ্ক যুক্ত করেছি ꫰ কখনও (ভাষান্তরজনীত ভ্রান্তিমুক্ত রাখতে) মূল টেক্সট বা বিশেষ কারও উদ্ধৃতি ইংরেজি ভাষায়ই হুবহু কপি করেছি꫰ একইভাবে এ পুস্তকে উল্লিখিত পাশ্চাত্যের ব্যক্তিবৃন্দের নামও উচ্চারণ বিভ্রাট থেকে মুক্তি পেতে কখনো কখনো আমি ইংরেজি ভাষায় লিখা সমিচিন মনে করেছি ꫰

☀️⭐〽️☁️⭕鱗⚖️ ✈️  

About Syed Mohd. Saleh Uddin

I am from Bangladesh (East Pakistan before 1971). I joined the PAF in 13 February, 1969 then served in the BAF and Bangladesh Army (AEC) and retired (as SWO) from the Bangladesh Army in December, 1986. Then I joined in a college as a Lecturer and lastly retired from the Rampura Ekramunnessa Degree College situated in Dhaka, Bangladesh in July 2012 as an Assistant Professor. During this long period, time to time I worked in the Dhaka University, National University, Bangladesh Open University, BISE and BTEB as an examiner or scrutinizer etc. I also served in the CATECH, HICAM, NIET etc institutes in different teaching capacities and now working in a literary project of Dr. Shah A. Rahim (Associate professor, BOU) as a translator of literary works and a free lancer for the world media viewers. I have few publications of various interests in Bangladesh.
This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

Leave a comment